মেয়েদের বয়স বাড়ার সাথে

Published by Unknown on  | No comments

মেয়েদের প্রস্রাবে সংক্রমণ একটি সাধারণ সমস্যা। এর প্রধান কারণ মেয়েদের শারীরিক গঠন। মেয়েদের মূত্রনালী খুবই ছোট এবং মূত্রনালীর দ্বার, যোনিদ্বার ও মলদ্বার এত কাছাকাছি যে জীবাণু সহজেই ঢুকে যেতে পারে। প্রস্রাব সংক্রমণের জীবাণু ই-কলাই মলের সাথে নির্গত হয়ে মলদ্বার থেকে মূত্রদ্বারের আশপাশের কোষকলায় বসতি স্থাপন করে এবং সুযোগ বুঝে মূত্রনালী দিয়ে মূত্রথলিতে প্রবেশ করে প্রস্রাবে সংক্রমণ ঘটায়।
মেয়েশিশুদের ক্ষেত্রে মল মূত্রদ্বারের সংস্পর্শে আসে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জ্ঞানের অভাবে জীবাণু মূত্রনালীতে ঢুকে পড়ে। মেয়েদের বয়স বাড়ার সাথে এর সংক্রমণের হারও বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে যৌনক্রিয়া থেকে। সহবাসের পর জীবাণু মূত্রনালী দিয়ে মূত্রথলিতে প্রবেশ করে। প্রস্রাবের মধ্যে এরা অতি দ্রুত সংখ্যায় বৃদ্ধি পায় ও প্রদাহের সৃষ্টি করে।কারণ

শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ করে ই-কোলাই। অন্যগুলোর মধ্যে প্রোটিয়াস, কেবসিয়েলা, সিউডোমনাস অন্যতম।

উপসর্গ

- প্রস্রাবে ভীষণ জ্বালাপোড়া করা

- বারবার প্রস্রাবে বেগ হওয়া

- প্রস্রাবের রঙ হলুদ হওয়া

- ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব হওয়া

- প্রস্রাব দুর্গন্ধযুক্ত ও পরিমাণে কম হওয়া

- তলপেটে ব্যথা অনুভূত হওয়া

- জ্বর আসা

প্রদাহ তীব্র হলে কিডনি আক্রান্ত হতে পারে। তখন সমস্যা তীব্রতর হতে পারে।

- জ্বর কেঁপে আসা

- রক্তবর্ণ প্রস্রাব হওয়া

- নাভির ওপরে পেছন দিকে দু’পাশে তীব্র ব্যথা হওয়া

- বমি বমি লাগা

- প্রস্রাব খুব কম হওয়া বা কয়েক ঘণ্টা প্রস্রাব না হওয়া।

বিয়ের পর সহবাসের সাথে সম্পর্কিত প্রদাহকে হানিমুন সিস্টাইটিস বা মধুচন্দ্রিমা মূত্রসংক্রমণ বলা হয়।

চিকিৎসা

সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়। জ্বর ও তলপেটে ব্যথার জন্য ব্যথানাশক ওষুধ দেয়া হয়। সাধারণত যেসব অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয় সেসব হলো সেফ্রাডিন, সিপ্রোফক্সাসিন, পিফক্সাসিন সেফালোস্পরিন, লিভোফক্সাসিন, গ্যাটিফক্সাসিন প্রভৃতি।

গর্ভবতীদের প্রস্রাবে প্রদাহ : জীবাণুসংক্রমণ না-ও হতে পারে। বারবার উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এমক্সিলিন, সেফ্রাডিন, সেফালোস্পরিন, ইরাইথ্রোমাইসিন দেয়া হয়।

ইউরেথ্রাল সিনড্রোম : খুব ঘন ঘন প্রস্রাবে ইনফেকশন হয়। প্রস্রাব পরীক্ষায় শুধু পাস-সেল পাওয়া যায়। তলপেটে ব্যথা থাকে।

হানিমুন সিস্টাইটিস : প্রস্রাবে প্রদাহ বারবার হলে দীর্ঘমেয়াদি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। প্রথমে পূর্ণমাত্রায় সাত থেকে ১০ দিন, পরে স্বল্পমাত্রায় দীর্ঘ দিন চিকিৎসা দেয়া হয়।

প্রতিরোধ ব্যবস্থা

- প্রতিদিন প্রচুর পানি (১০-১২ গ্লাস) পান করতে হবে

- কখনো প্রস্রাব আটকে রাখা উচিত নয়

- প্রতি দুই-তিন ঘণ্টায় একবার প্রসাব করা উচিত

- সহবাসের পর প্রস্রাবের রাস্তা ধুয়ে ফেলা উচিত
ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। প্রস্রাবের পর টিসুপেপার দিয়ে সামনে থেকে পেছনের দিকে পরিষ্কার করতে হবে। পরে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুতে হবে। সহবাসের আগে প্রস্রাবের রাস্তা ও যোনিদ্বার ভালোভাবে ধুয়ে নিলে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

জটিলতা
খুব তীব্র ও দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহে কিডনি আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হতে যেতে পারে। কিডনিতে যক্ষ্মাও হতে পারে।
লেখক : ডা: মিজানুর রহমান কল্লোল, আবাসিক সার্জন, সার্জারি বিভাগ ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ
২ ইংলিশ রোড, ঢাকা।

Filed in :
About the Author

Write admin description here..

0 মন্তব্য:

    If you would like to receive our RSS updates via email, simply enter your email address below click subscribe.

Discussion

Blogger template. Proudly Powered by Blogger.
back to top